সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৩৮ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
হাসিনার সঙ্গে ভারতীয়রাও পিলখানা হত্যাকাণ্ডে জড়িত বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে তরুণী একটি ফ্যান ও দুটি বাতির বিদ্যুৎ বিল ৩লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা! তারেক রহমানকে ফিরতে চাইলে একদিনের মধ্যে ট্রাভেল পাস দেবে সরকার তাহাজ্জুদের নামাজের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল মাদরাসাছাত্র অস্ট্রেলিয়ায় ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন নেপথ্যে তারেক রহমান শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উম্মোচন মেহেরপুর পৌর বিএনপির (উত্তর) নতুন কার্যালয় উদ্বোধন জামায়াতের সাবেক আমিরের কবর জিয়ারত করলেন বিএনপির প্রার্থী মিন্টু মেহেরপুরে খোকসা যুব সংঘের উদ্যোগে অসহায় পরিবারের মাঝে অর্থ ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ টানা তৃতীয়বারের মতো জামায়াতের আমীর হিসেবে শপথ নিলেন ডা. শফিকুর রহমান

হাসিনার সঙ্গে ভারতীয়রাও পিলখানা হত্যাকাণ্ডে জড়িত

বিডিআর বিদ্রোহের নামে ২০০৯ সালে ঢাকার পিলখানা সদর দপ্তরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ১৬ বছর পর গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে। আজ রোববার (১ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমানসহ অন্যান্য সদস্যরা প্রতিবেদনটি প্রধান উপদেষ্টার হাতে তুলে দেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দেশের ইতিহাসে অন্ধকার অধ্যায়। কমিশনের সত্য উদঘাটন জাতির কাছে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হয়ে থাকবে।”

কমিশনপ্রধান ফজলুর রহমান জানান, ১৬ বছর আগের ঘটনার অনেক আলামত ধ্বংস হয়ে গেছে, অনেক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বিদেশে চলে গেছেন। তবুও তদন্তে সাক্ষ্যগ্রহণ, উপকরণ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে চেষ্টা করা হয়েছে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর নিরূপণ করতে। তদন্তে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত ছিল এবং এর প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন তৎকালীন সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। এছাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগ জড়িতদের রক্ষা করতে সরাসরি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।

কমিশন জানিয়েছে, পিলখানায় নিহত বা যেসব সদস্য রাষ্ট্রীয় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, তাদের নাম-পরিচয় ঠিকভাবে সংরক্ষিত হয়নি। তদন্তে দেখা গেছে, বিডিআর হত্যাকাণ্ডে বহিঃশক্তি, বিশেষত ভারতের সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের ৯২১ ভারতীয় প্রবেশ করেছিলেন, তার মধ্যে ৬৭ জনের অবস্থান অজানা। ভারতের উদ্দেশ্য ছিল সেনাবাহিনী ও বিডিআরকে দুর্বল করা এবং দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করা।

কমিশনের সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার বলেন, “হত্যাকাণ্ডের বাহ্যিক ও প্রকৃত কারণ চিহ্নিত হয়েছে। রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সিভিলিয়ানদেরও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।” প্রতিবেদনে উল্লেখযোগ্য নামের মধ্যে আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, শেখ সেলিম, মির্জা আজম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাহারা খাতুন, জেনারেল তারেক, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মইন, ডিজিএফআইয়ের সাবেক প্রধান জেনারেল আকবর।

পটভূমি হিসেবে বলা যায়, ২০০৯ সালের ২৫–২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় ৫৮ সেনা সদস্যসহ ডিজির স্ত্রী নাজনীন হোসেন শাকিল ও আরও অনেকে হত্যা হন। হত্যাকাণ্ডের দুই বছর আগে থেকেই পরিকল্পনা চলছিল এবং ২০০৭ সালে বিপথগামী বিডিআর সদস্যরা ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছিলেন। এরপর বিভিন্ন বৈঠকের মাধ্যমে ২০০৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হত্যার পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়।

কমিশন ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ এবং ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিতে কিছু সুপারিশ করেছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও স্বরাষ্ট্র সচিব।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved Meherpur Sangbad © 2025